রবিবার, ২৫ মে, ২০১৪

খাদ্যে ভেজালের দেওয়ার জন্য অপরাধ প্রতি ১০০ বেত চাই !!!

খবরটা পড়ে পুনরায় আঁতকে উঠলাম! জানলাম, এখন মাছে শুধু ফরমালিনই ব্যবহার করা হচ্ছে না, মাছকে তাজা দেখানোর জন্য সেটার কান্তার মধ্যে কাপড়ের লাল রঙও ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাছে ঢেঁড়সের রস- যা কিছুটা পিচ্ছিল ও আঠালো, তাও ব্যবহার করা হচ্ছে। এই রস মাছের গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে- মাছে তাজা ভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য। এইসবই করা হচ্ছে আবার “বেশী দামে ভাল মাছ খাওয়ার” বিজ্ঞাপন টাঙ্গিয়ে!  মানে যে দোকানে এই ভেজাল মিস্ত্রিত মাছ ভ্রাম্যমাণ আদালত ধরেছে, সেই “মামা–ভাগিনা ইলিশ মাছের দোকানে”র সাইনবোর্ডে লেখা আছে “যার মান ভালো, তার দাম ভালো’।


আমি বাজার থেকে সাধারণত: এইসব মাছ গুলোই কিনে থাকি কিছুটা ভেজাল ফ্রি মাছ খাওয়ার জন্য। এখন দেখছি, এতে আরও বেশি ভেজাল! ফরমালিন তো আছেই, সাথে ডায়িং কেমিক্যাল ফ্রি !!!

শুধু মাছই নয়, ফরমালিন আছে আম, লিচু সহ বাজারের সবধরনের মৌসুমি ফলেও!

আসলে জাতি হিসেবে আমরা এতটাই পচে গেছি যে, কোন আর্থিক আইন বা জেল জরিমানা দিয়ে এসব থেকে আর আমাদের আর মুক্তি মিলবে না। তাই চাই টরট আইন (Tort Law)! মানে শাস্তি হিসেবে নগদে মাইর !!!

প্রতি অপরাধ ১০০ বেত চাই, প্রকাশ্যে !!!  

২৫/০৫/২০১৪, বিকাল ৪.১৪

বেসিক ব্যাংকের এমডি অপসারণঃ কিন্তু টাকার কি হবে?

খবরে পড়লাম, সরকার বেসিক ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ করেছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন তাকে এখন অপসারণ করে কি লাভ? কাজ যা করার তা তো করেই ফেলেছে অর্থাৎ লুটপাট কমপ্লিট করার পর এখন তাকে সরিয়ে কি লাভ? টাকার কি হবেঅপরদিকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান জনাব বাচ্চু'র কি হবে? রাজনৈতিক লিঙ্ক থাকায় সেও কি আর সবার মত বেঁচে যাবে? যেমন বেঁচে গেছে জনতা ব্যাংকের চোরগুলা! 

আমি মনে করি গত ও এবারের আওয়ামীলীগ সরকার, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এই ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতাই শুধু দেখায়নি, চরম আর্থিক অন্যায়ও করেছেন! সাধারণ মানুষের গচ্ছিত টাকা তার লুট করিয়েছেন বা লুটে সহায়তা করেছেন। অন্যকোন দেশ হলে এতদিন সোনালী, বেসিক সহ আরও কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যেত এবং এদের আজীবন জেল বা ফাঁসী হত। সব সম্ভবের দেশ বলে বাংলাদেশে এখনো  এরা বড় গলায় কথা বলছেন এবং স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন! একটু লজ্জাও নেই এদের! এরাই নাকি দেশের জ্ঞানী গুণী আর শিক্ষিত মানুষ! আওয়ামীলীগকে এরাই ভোটে জেতাবে? দেখা যাবে ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন হলে !!!

অপেক্ষায় আছি !!!  


২৫/০৫/২০১৪, রাতঃ ৯.৩০ 

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০১৪

সোনার চক্কর

গ্রাম্য একটা প্রবাদ আছে, স্বর্ণকার যদি তার মায়ের জন্যও গহনা বানায় তাহলেও সে চুরি করবে। তারপরও মানুষ এটা জেনেই গহনা বানায় বা কেনে, অনেকটা শেয়ালের কাছে মুরগী বন্ধক রাখার মত অবস্থা; আর কি !!!
স্বর্ণের প্রতি মানুষের লোভ জন্ম জন্মান্তর ধরে চলে আসছে স্থান কাল পাত্রবিহীন ভাবে। এটা কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না বা হবেও না, যতদিন না এর বিকল্প কোনকিছু বের হচ্ছে বা মেয়েরা এর ব্যবহার বন্ধ করছে। অবশ্য ছেলেরাও এখন এটা ব্যবহারে কম যায় না! জনাব বাপ্পি লাহিড়ী এর জলজ্যান্ত উদাহরণ।
এক সময় রাজা মহারাজদের রাজকোষে থাকা সোনা প্রমাণ করত তার ক্ষমতা যা এখনও বর্তমান। আবার মন্দিরে মন্দিরে সন্তুষ্টি ও অর্ঘের নামে দেবতাকে স্বর্ণদানের খবর কে না জানে? এছাড়াও আছে ফারাওদের সোনার মকুট, তৈজসপত্র আর কফিন।
স্প্যানিশদের দ্বারা ইনকা সভ্যতা ধ্বংসই হল এই সোনার কারণে। আজ আফ্রিকায় যে এত হানাহানি তারও মুলেও আছে সোনা। জনাব ঘোড়ি'র ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্যই ছিল সোনা লুট। তার হাতে লুট হওয়া সোমনাথ মন্দির তো ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। আরব শেখদের সোনার গাড়ী ও বিমানের খোঁজ আমরা কয়জন রাখি? সাদ্দাম হোসেনের সোনার পিস্তল, এক-৪৭ আর সোনার টয়লেট তো মিস্ট্রি, যা একজন একনায়কের খেয়ালের নমুনা নির্দেশ করে। আবার ইরাক দখলের পর সেই সোনার একে-৪৭ চুরি করে আমেরিকায় পাচার করতে যেয়ে সেই নীতিবান দেশের সেনা সদস্য হাতেনাতে ধরাও পড়ে। এছাড়াও আছে হালের ফ্যাশন আইফোন; তবে সেটাও হচ্ছে স্বর্ণের যা বড় লোকদের হাতে হাতে পৌছাতে হয়ত আর কিছুদিন লাগবে। শোনা যায়, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বাহন এয়ার ফোরস ওয়ান নামক বিমান দুটিও সোনার পাতে জড়ানো, রাডারে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বিজ্ঞানীদের এই কর্ম । অর্থাৎ ছোট থেকে বড়, ধনী থেকে গরীব; সবাই সোনার জন্য লালায়িত। এখানে একেবারেই সাম্য; রাজা-প্রজা, পাপি-দেবতা, ডাকাত-বিজ্ঞানী সব সমানে সমান ! এক কথায় যাকে বলে সোনায় সোহাগা !
এখন আসি মূল প্রসঙ্গে- বর্তমানে আমাদের দেশে সোনা চোরাচালান বেড়ে যাওয়ার মুল কারণ হল, ভারতে সোনা আমদানির উপর সেই দেশের সরকার ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। এই কারণে চোরাচালানকারীরা বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে খরচ কমানোর জন্য। আর এটা করতে যেয়ে যতটুকু ধরা পড়ছে তার অন্তত: ৯৯ গুণ বেশী ধরা না পড়ে পাচার হচ্ছে অর্থাৎ ধরা পড়াটুকুকে খরচের খাতায় ধরেই সব কিছু হচ্ছে, চোরাচালানের নীতি অনুযায়ী !
ভারত, প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের মত সোনা আমদানি করে প্রতি বছর, এর কিছু অংশ পাচার হয়ে যাবে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে। আর এগুলো বিক্রি হবে মূলত ভারতের কালোটাকার মালিকদের কাছে কারণ এর কোন ডকুমেন্ট থাকবে না ভারতের কাস্টমসে। আবার বিক্রেতার বিক্রয় খাতায়ও এটা লেখা থাকবে না।
এটা জানা দরকার যে, ভারতে কালোটাকা মানে কালোটাকা! আমাদের মত করে চিন্তা করলে ভারতে এই কালোটাকা ধারীদের জ্বালা বা প্রকৃত শাস্তি বোঝা যাবে না। আমাদের কাছে তো টাকা মানে টাকা, সেটার আবার ভাল-মন্দ বা সাদা-কালো আছে নাকি? চুরি-ডাকাতি, ঘুষ-দুর্নীত, খুন-গুম যেভাবেই আসুন না কেন, যার হাতে থাকবে টাকা; সেই হল মালিক এই বাংলাদেশ। আর সেটা লুকানোর কোন চিন্তাই নেই- গাড়ী-বাড়ী-নারী থেকে শুরু করে সম্মান ও ক্ষমতাও কেনা যায়, এটা দিয়ে যখন তখন এই দেশে।
অপরদিকে, ভারতে আয়কর দফতরের ভয়ে; এই টাকা লুকানোর জন্য কালোটাকার মালিকেরা বাড়ীতে ডাবল ওয়াল বানিয়ে তার মধ্যে, মাটির নীচে, বিছানার তোষক; হেন কোন পদ্ধতি নাই, যা ব্যবহার করে না, আর সোনা হল টাকা লুকানোর সেরা ও সহজ মাধ্যম ! এছাড়াও আছে জনাব আনা হাজারের সব বড় নোট অচল করে দেওয়ার হুমকি। আবার রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার নতুন সার্কুলার, " যেসব রূপির নোটে সাল লেখা নেই তা ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে বদলিয়ে নিতে হবে"। অর্থাৎ এটা করতে গেলে কালো টাকার মালিকরা জায়গায় দাঁড়িয়ে ধরা খাবে আর তাই তো তাদের কাছে সোনাই ভরসা।
অর্থাৎ যারা কালোটাকা বিনিয়োগ ও লুকাতে ভয় পাচ্ছে বা বিদেশে সেই টাকা পাচার করতে পারছে না বা সেই সামর্থ্য নেই তারা কালোটাকার নোটের বদলে সোনা সংগ্রহ করছে যাতে করে ছোট কোন জায়গায় এটা সহজেই লুকানো যায়। আবার এর বিক্রেতারা কালোসোনা বা চোরাই সোনা দিয়ে ছোট ছোট কালো টাকার মালিকদের নিকট থেকে সেই টাকা সংগ্রহ করে তা একযোগে হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার করে দিচ্ছে, যার শেষ গন্তব্য হচ্ছে সুইস ব্যাংক। আর কে না জানে সুইস ব্যাঙ্কে আছে সবচেয়ে বেশী ভারতের নাগরিকদের টাকা যার পুড়োটাই কালো। আর ব্যবসায়ীদের এবার জনাব নরেন্দ্র মোদীকে একযোগে সমর্থনের পিছনেও আছে এই লুকায়িত টাকা ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার একটা গোপন ইচ্ছা!
নিজের টাকা বেনামে রাখতে আর কতক্ষণ ভাল লাগে বা যদি ভোগে না লাগে তবে টাকা রেখে কি লাভ? তাই ব্যবসায়ীদের একটা গোপন ইচ্ছা; জনাব মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশে কালোটাকা বিনিয়োগ করার একটা সুযোগ দিবে কারণ ভারতের মত দেশে এই সুযোগ দান এত সহজ নয়, যেখানে জনাব আনা হাজারের মত সামাজিক আর জনাব কেজরিওয়ালের মত রাজনৈতিক সৎ নেতৃত্ব বর্তমান। আর তাই চাই মোদীর মত সাহসী নেতা!
আবার জনাব মোদী যদি সত্যিই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন এবং কালোটাকা সহজ বিনিয়োগের সুযোগ দেন তাহলে সেখানে সোনার দাম কমে যাবে এবং এখনকার ঠিক উল্টো স্রোত বইবে তখন।
অতএব, এটা ধরে নেওয়াই যায় যে, এই সোনার চক্কর থেকে এত সহজে আমাদের মুক্তি মিলবে না !!!
১৪/০৫/২০১৪, ৪.৩০ বিকাল